বাংলাদেশে ডায়াবেটিস : সচেতনতা ও প্রতিকার

Last Updated: August 13, 2024By

বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য সমস্যাগুলির মধ্যে ডায়াবেটিস একটি গুরুতর সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে, বাংলাদেশে প্রায় ৪০ লাখেরও বেশি মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত।

এই পরিসংখ্যান প্রতিনিয়ত বাড়ছে এবং এর জন্য সচেতনতা ও প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

ডায়াবেটিস কি?

ডায়াবেটিস একটি দীর্ঘমেয়াদী রোগ যা শরীরে ইনসুলিনের অভাব অথবা ইনসুলিনের কার্যকারিতা কমে যাওয়ার কারণে ঘটে। ইনসুলিন হলো এমন একটি হরমোন যা রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।

ডায়াবেটিসের প্রধান দুটি ধরন:

1. টাইপ ১ ডায়াবেটিস: এটি একটি অটোইমিউন রোগ যেখানে শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অদ্ভুতভাবে ইনসুলিন উৎপাদনকারী কোষগুলো ধ্বংস করে ফেলে। সাধারণত এটি শিশু বা তরুণদের মধ্যে দেখা যায়।

2. টাইপ ২ ডায়াবেটিস: এটি সবচেয়ে সাধারণ ধরনের ডায়াবেটিস এবং প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। এখানে শরীর ইনসুলিন তৈরি করতে পারে কিন্তু এটি যথাযথভাবে কাজ করে না।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ডায়াবেটিস

বাংলাদেশে ডায়াবেটিসের বৃদ্ধির কারণ হিসেবে খাদ্যাভ্যাস, জীবনযাত্রার অভ্যাস, এবং বংশগত কারণে এই রোগের প্রবণতা উল্লেখযোগ্য।

সাধারণত উচ্চ শর্করা ও চর্বিযুক্ত খাবার, শারীরিক পরিশ্রমের অভাব, এবং মানসিক চাপ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়।

লক্ষণ ও উপসর্গ

ডায়াবেটিসের সাধারণ লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে:

– অতিরিক্ত পিপাসা
– বারবার মূত্রত্যাগ
– স্থূলতা বা ওজনের দ্রুত বৃদ্ধি
– অবসন্নতা
– ধূসর বা ক্ষত না সারার সমস্যা

প্রতিরোধ ও চিকিৎসা

ডায়াবেটিসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ:

1. স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: খাদ্যতালিকায় শর্করা ও চর্বির পরিমাণ কমিয়ে স্বাস্থ্যকর খাবার যেমন সবজি, ফলমূল, এবং শস্যজাতীয় খাবার অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।

2. নিয়মিত ব্যায়াম: প্রতিদিন নিয়মিত ব্যায়াম করা যেমন হাঁটা, দৌড়ানো, বা যোগব্যায়াম ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়।

3. ওজন নিয়ন্ত্রণ: স্থূলতা ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়, তাই স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা জরুরি।

4. নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষণ: রক্তে গ্লুকোজের স্তর নিয়মিত পরীক্ষা করা উচিত, বিশেষত যারা পরিবারে ডায়াবেটিসের ইতিহাস রয়েছে তাদের জন্য।

5. চিকিৎসার সঙ্গে পরিচিতি: যদি কেউ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ইনসুলিন বা অন্যান্য ঔষধ গ্রহণ করা উচিত।

সমাজের ভূমিকা

ডায়াবেটিস সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং স্থানীয় কমিউনিটিকে সচেতন করার উদ্যোগ নেওয়া উচিত। মিডিয়া, স্বাস্থ্যকর্মী, এবং সমাজসেবী প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্রিয় অংশগ্রহণে ডায়াবেটিস সম্পর্কে আরও শিক্ষার সুযোগ তৈরি করা যেতে পারে।

ডায়াবেটিস একটি জীবনব্যাপী চ্যালেঞ্জ হলেও, সচেতনতা, প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যকর অভ্যাস, এবং চিকিৎসার মাধ্যমে এটি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। আমাদের উচিত এই রোগের বিরুদ্ধে সচেতনতা বাড়ানো এবং প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নিয়ে সুস্থ জীবনযাপনের প্রচেষ্টা করা।

editor's pick

latest video

news via inbox

Nulla turp dis cursus. Integer liberos  euismod pretium faucibua

Leave A Comment