টুথপেস্টের সহজ ব্যবহার

Last Updated: July 31, 2024By

দাঁতের সুরক্ষায় প্রতিদিন আমরা যে প্রোডাক্টটি সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করছি তা হলো টুথপেস্ট। কিন্তু সঠিক টুথপেস্ট বেছে না নিলে তা আপনার দাঁতকে সুরক্ষিত করবে না; বরং ঠেলে দেবে তা বিপদের মুখে।

টুথপেস্ট কেনার সময় সবচেয়ে আমরা বেশি যে ভুলটি করি তা হলো টুথপেস্টটি কী দিয়ে তৈরি হয়েছে তা যাচাই না করা। সেই সঙ্গে মোড়কের গায়ে অনেক নির্দেশনা বা সংকেত থাকে, যা সম্পর্কে আমরা মোটেও অবগত নই। তাই চলুন জেনে নিই দাঁতের সুরক্ষায় কোন ধরনের টুথপেস্ট কার্যকরী আর কোনগুলো মোটেও কার্যকরী নয়।

টুথপেস্ট কেনার সময় টিউবের একেবারে নিচের দিকে লক্ষ করুন। এই অংশে লাল, কালো, সবুজ বা নীল রঙের দাগ থাকে। এই রং একটি সংকেত নির্দেশ করে। প্রোডাক্টটির গুণগত মান সম্পর্কে জানতে হলে অবশ্যই এই সংকেত সম্পর্কে আপনার ধারণা থাকা প্রয়োজন।

যদি টিউবের একেবারে নিচের অংশে সবুজ দাগ দেখেন তবে সেটা পুরোটাই ন্যাচারাল উপাদান দিয়ে তৈরি টুথপেস্ট বলা যায়। যদি এই রং নীল হয়, তবে তা নির্দেশ করছে টুথপেস্টটি ন্যাচারাল উপাদানের সঙ্গে মেডিসিনযুক্ত পেস্ট।

টুথপেস্টের লাল রং নির্দেশ করছে ন্যাচারাল উপাদানের সঙ্গে কেমিক্যালযুক্ত। আর কালো রং নির্দেশ করছে টুথপেস্টটি  সম্পূর্ণ কেমিক্যালযুক্ত। দাঁতের সুরক্ষায় এই কালো রঙের চিহ্নিত পেস্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।

দাঁতের সংবেদনশীলতা বা শিরশিরানি ভাব উপশমের মূল উপাদান হলো পটাশিয়াম নাইট্রেট, স্ট্যানাস ফ্লোরাইড এবং স্ট্রন্টিয়াম ক্লোরাইড। টুথপেস্টের সক্রিয় উপাদান দাঁতের স্নায়ুগুলো শান্ত করতে সাহায্য করে এবং গরম বা ঠান্ডা খেলে শিরশিরানি ভাব কম করে। তাই যাদের দাঁতে শিরশিরানির সমস্যা রয়েছে, তারা অন্য টুথপেস্ট ব্যবহার না করে এই উপাদান সমৃদ্ধ টুথপেস্ট ব্যবহার করুন।

যাদের দাঁতে খাবার জমে থেকে দাগের সৃষ্টি হয়েছে, তারা অ্যাবরেসিভ সমৃদ্ধ টুথপেস্ট ব্যবহার করুন। কারণ, অ্যাবরেসিভের কাজ হলো দাঁতের এনামেল নষ্ট না করে, আলতো করে দাঁতের ওপর দিক স্ক্রাব করে ময়লা অপসারণ করা। তাই জমে থাকা ময়লা এবং দাগ দূর করতে অ্যাবরেসিভ সমৃদ্ধ টুথপেস্ট ব্যবহার করুন।

দাঁত পরিষ্কার ছাড়াও টুথপেস্টের রয়েছে আরও ব্যবহার। দৈনন্দিন নানা কাজেও এটি ব্যবহার করা যায়।

তবে দাঁত ব্রাশ ছাড়া অন্য কোনো কাজে টুথপেস্ট ব্যবহার করলে শুধু সাদা টুথপেস্ট ব্যবহার করা উত্তম।

চলুন জেনে নিই টুথপেস্টের নানাবিধ ব্যবহারঃ

আইভরিঃ হাতির দাঁত দিয়ে তৈরি যেকোনো জিনিস পরিষ্কার করতে টুথপেস্ট ব্যবহার করা যায়। ব্রাশে টুথপেস্ট লাগিয়ে ঘষা দিন। এরপর ভেজা কাপড় দিয়ে মুছে ফেলুন। এভাবে হারমনিয়াম ও পিয়ানোর কি-ও পরিষ্কার করতে পারেন।

নখঃ পুরোনো ব্রাশে টুথপেস্ট লাগিয়ে নখ ঘষুন। ঝকঝকে হয়ে উঠবে।

কাপড়ে মরিচা দাগঃ কাপড়ের মরিচার দাগ তুলতে টুথপেস্ট লাগিয়ে রাখুন। শুকিয়ে এলে পানিতে ভিজিয়ে ঘষে ঘষে ধুয়ে ফেলুন। মরিচার দাগ দূর হয়ে যাবে।

ডায়ামন্ডঃ  ভেজা কাপড়ে টুথপেস্ট লাগিয়ে ডায়ামন্ডের আংটি পরিষ্কার করুন।

জার পরিষ্কারেঃ অনেক দিন সংরক্ষণ করার ফলে মসলা, দুধ ও অন্য খাবারের জার গন্ধ হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে টুথপেস্ট ও ব্রাশের সাহায্যে জার পরিষ্কার করতে পারেন। একই উপায়ে শিশুদের ফিডারও পরিষ্কার করতে পারেন।

আয়নাঃ বাথরুমের আয়নায় পানির দাগ থাকে। পানির দাগ দূর করতে টুথপেস্ট ব্যবহার করুন।

সিলভার স্টিলঃ সিলভার ও স্টিলের আসবাব বা বাসনের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে টুথপেস্ট ও স্ক্রাবার ব্যবহার করুন।

মার্বেল টাইলসঃ মার্বেল পাথর ও টাইলসের মেঝেতে মরিচার দাগ বা চুইংগামের দাগ দূর করতে টুথপেস্ট ভালো কাজ করে।

সিঙ্ক বেসিনঃ রান্নাঘরের সিঙ্ক ও বেসিন পরিষ্কারে স্ক্রাবার ও টুথপেস্ট ব্যবহারে চকচকে ভাব আসবে, সঙ্গে দূর হবে জীবাণুও।

দেয়ালের দাগঃ দেয়ালে ক্রেয়নের দাগ তুলতে টুথপেস্ট খুব ভালো কাজ করে।

লিপস্টিকের দাগঃ কাপড়ের লিপস্টিকের দাগ তুলতে টুথপেস্ট ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়াও কাপড়ে কালির দাগ তুলতে টুথপেস্ট লাগিয়ে রাখুন। শুকিয়ে এলে ঘষে ধুয়ে ফেলুন। কালির দাগ উধাও হয়ে যাবে।

কাঠের আসবাবঃ কাঠের আসবাবের ওপর পানি বা কোল্ড ড্রিঙ্কসের দাগ তুলতে কাপড়ে টুথপেস্ট লাগিয়ে দাগের ওপর ধীরে ধীরে ঘষুন। দ্বিতীয় ধাপে পরিষ্কার শুকনো কাপড় দিয়ে মুছে ফেলুন।

ব্রণঃ ইদানীং অনেকেই এ পদ্ধতি ব্যবহার করেন। ব্রণের ‍উপর টুথপেস্ট লাগিয়ে সারারাত রেখে দিন। সকালে উঠে ধুয়ে ফেলুন। এতে ব্রণ আকারে ছোট হয়ে যাবে। টুথপেস্ট ব্রণে জমা তেল শোষণ করে দ্রুত সারিয়ে তোলে।

হাত পায়ের দুর্গন্ধ এড়াতেঃ পেয়াজ-রসুন কাটার ফলে হাতে দুর্গন্ধ হয় আবার মোজা পরার ফলে পায়েও দুর্গন্ধ হতে পারে। এক্ষেত্রে হাত ও পায়ে টুথপেস্ট ব্রাশ করে ধুয়ে ফেলুন।

 

(সংগৃহীত)

editor's pick

latest video

news via inbox

Nulla turp dis cursus. Integer liberos  euismod pretium faucibua

Leave A Comment