চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা
বর্তমান সময়ে অনেকেই স্বাস্থ্য নিয়ে বেশ সচেতন। প্রতিদিনের খাবার ও খাবারের পুষ্টিগুণ নিয়ে মানুষের সচেতনতা বাড়ছে। স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের খাবারের তালিকায় এখন বেশ জনপ্রিয় ‘চিয়া সিড’।
চিয়া হচ্ছে সালভিয়া হিসপানিকা নামক মিন্ট প্রজাতির উদ্ভিদের বীজ। এটি মূলত মধ্য আমেরিকা ও মেক্সিকোর মরুভূমি অঞ্চলে বেশি জন্মায়। প্রাচীন অ্যাজটেক জাতির খাদ্য তালিকায় এটি অন্তর্ভুক্ত বলে বিশেষজ্ঞরা দাবি করে থাকেন। এগুলো দেখতে অনেকটা তোকমা দানার মতো। চিয়া বীজ সাদা ও কালো রঙের এবং তিলের মতো ছোট আকারের।
বীজ জাতীয় যেকোনো খাবারই স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি। চিয়া সিডকে বলা হয় সুপারফুড। এতে আছে প্রচুর ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড, কোয়েরসেটিন, কেম্পফেরল, ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড ও ক্যাফিক এসিড নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, আয়রন, ক্যালসিয়াম এবং দ্রবণীয় ও অদ্রবণীয় খাদ্য আঁশ।
পুষ্টিবিদরা বলেন, ‘চিয়া সিড একটি অত্যন্ত পুষ্টিকর খাবার। এতে আছে দুধের চেয়ে ৫ গুণ বেশি ক্যালসিয়াম, কমলার চেয়ে ৭ গুণ বেশি ভিটামিন সি, পালং শাকের চেয়ে ৩ গুণ বেশি আয়রন, কলার চেয়ে দ্বিগুণ পটাশিয়াম, মুরগির ডিম থেকে ৩ গুণ বেশি প্রোটিন, এতে আছে স্যামন মাছের চেয়ে ৮ গুণ বেশি ওমেগা-৩। তাই খাদ্য তালিকায় সপ্তাহে অন্তত ৩-৪ দিন চিয়া সিড রাখতে পারেন।’
চিয়া সিড খাওয়ার নিয়মঃ
পানিতে ভিজিয়ে সহজেই খাওয়া যায় চিয়া সিড। চাইলে ওটস, পুডিং, জুস, স্মুথি ইত্যাদির সঙ্গে মিশিয়েও খেয়ে নেয়া যায়। এ ছাড়া কেউ চাইলে টকদই, রান্না করা সবজি বা সালাদের ওপরে ছড়িয়েও খেতে পারেন। স্বাভাবিক পানি কিংবা হালকা কুসুম গরম পানিতে ২০ থেকে ৩০ মিনিট ভিজিয়ে রাখবেন চিয়া সিড। এরপর সকালে খালি পেটে খেতে পারেন। আবার ঘুমানোর আগেও এটি খাওয়া যায়।
চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতাঃ
১। চিয়া সিডে আছে ওমেগা-৩, যা হৃদরোগের ঝুঁকি ও ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমাতেও সাহায্য করে
২। এটি শরীরের শক্তি ও কর্মক্ষমতা বাড়ায়
৩। প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকায় চিয়া সিড রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করে
৪। মেটাবলিক সিস্টেমকে উন্নত করার মাধ্যমে এটি ওজন কমাতে সহায়তা করে
৫। চিয়া সিড ব্লাড সুগার (রক্তের চিনি) স্বাভাবিক রাখে, যা ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি কমায়
৬। এতে আছে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম, যা হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষায় বিশেষ উপকারী
৭। চিয়া সিড কোলন পরিষ্কার রাখে। ফলে কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি কমে
৮। এটি শরীর থেকে টক্সিন (বিষাক্ত পদার্থ) বের করে দিতে সাহায্য করে
৯। চিয়া সিড পেটের প্রদাহজনিত বা গ্যাসের সমস্যা দূর করে
১০। ভালো ঘুম হতেও সাহায্য করে চিয়া সিড
১১। চিয়া সিড হজমে সহায়তা করে
১২। চিয়া বীজ হাঁটু ও জয়েন্টের ব্যথা দূর করে
১৩। এটি ত্বক, চুল ও নখ সুন্দর রাখে
চিয়া সিড এর অপকারিতাঃ
১. গবেষণায় জানা গেছে, চিয়া সিড প্রোস্টেট ক্যান্সার এবং স্তন ক্যান্সারকে বাড়িয়ে তুলতে পারে। তাই ভালোর কথা ভেবে বেশি বেশি না খেয়ে এটি সীমিত পরিমাণে ব্যবহার করা উচিত।
২. পরিমাণের থেকে বেশি খেলে পেটের সমস্যা হতে পারে।
৩. অতিরিক্ত চিয়া সিড খেলে ওজন অস্বাভাবিকভাবে কমে যেতে পারে, এটি খারাপ হতে পারে।
সব জিনিসেরই ভালো-খারাপ থাকে। চিয়া সিডে ভালোর পরিমাণ বেশি হলেও কিছুটা খারাপ প্রভাবও দেখা যায় মাঝে মাঝে। এটা ব্যবহারের উপরও নির্ভর করে।
(সংগৃহীত)
editor's pick
latest video
news via inbox
Nulla turp dis cursus. Integer liberos euismod pretium faucibua