নিয়মিত বাদাম খাওয়ার উপকারিতা
সময় কাটাতে, ছোটখাটো ক্ষুধা মেটাতে কিংবা বন্ধুদের আড্ডায় চায়ের পর সবচেয়ে বেশি থাকে যে জিনিস তা হলো বাদাম। বাদাম খেতে সবারই ভালো লাগে। কেউ কেউ সকালে কাঁচা বাদাম খান। আবার কেউ ভাজা বাদাম, বাদাম মাখা কিংবা মুড়ি দিয়ে বাদাম খান। কিন্তু প্রতিদিন বাদাম খাওয়া কি স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো?
পুষ্টিগুণ এবং শরীরিক উপকারিতার দিক থেকে দেখতে গেলে বাদামের কোনো বিকল্প হয় না। আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য বাদাম খুবই উপকারী। এতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ই, ফাইবার, সেলেনিয়াম, ভিটামিন সি, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, অ্যামাইনো অ্যাসিড, পটাশিয়াম এবং ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডসহ আরও কত কী যে আছে, যা নানাভাবে শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি করে শরীরকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত কেউ যদি এক বাটি করে বাদাম খাওয়া শুরু করেন, তাহলে তা শরীরকে চাঙা তো রাখেই, সেই সঙ্গে একাধিক রোগ দূরে রাখতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
নিয়মিত বাদাম খাওয়ার উপকারিতাঃ
ওজন নিয়ন্ত্রণ করে
বাদাম নিয়মিত খেলে নিয়ন্ত্রণে থাকে ওজন। এমনই দাবি করা হয়েছে গবেষণায়। কারণ, বাদামে কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট আর প্রোটিন থাকে যথেষ্ট মাত্রায়।
ক্যানসার নিয়ন্ত্রণ করে
বাদামে ফোলিক অ্যাসিড আর ফাইটিক অ্যাসিড রয়েছে। এই দুই অ্যাসিড কোলন ক্যানসারের মতো রোগ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়
একটি গবেষণায় দেখা গেছে, বাদাম যদি নিয়মিত খাওয়া যায়, তাহলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। ফলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি প্রায় ৩০ শতাংশ কমে আসে।
স্বাস্থ্য উপকারিতাঃ
- বাদাম হৃদপিণ্ড ও রক্তের ভালো কোলেস্টেরল বাড়ায়
- হৃদপিণ্ড ভালো রাখতে সাহায্য করে
- চোখ, ত্বক, হাড় ও দাঁতের গঠনে সাহায্য করে
- হজম প্রক্রিয়া মজবুত করে
- মস্তিষ্কের বিকাশে সাহায্য করে, স্মৃতিশক্তি বাড়ায়
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
- বিভিন্ন ধরনের ফাংগাল ও ভাইরাল ইনফেকশন প্রতিরোধ করে
প্রতিদিন কতটুকু বাদাম খাওয়া যেতে পারে
ন্যাশনাল লাইব্রেরি অফ মেডিসিনের (এনএলএম) তথ্য অনুযায়ী, একজন ব্যক্তি দিনে ৩০ গ্রাম বাদাম খেতে পারেন।
অতিরিক্ত বাদাম গ্রহণ করলে কী ক্ষতি হতে পারে
- বাদামের অনেক উপকারিতা থাকলেও অতিরিক্ত গ্রহণ করলে তা ক্ষতিকর হতে পারে। পলি আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড প্রধানত ওমেগা-৬। ওমেগা -৬ ফ্যাটি এসিড যখন বেশি পরিমাণে থাকে তখন ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড বিক্রিয়া করে টক্সিক হয়ে যায়।
- ওমেগা ৬ অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ করা হলে তা হার্টের রোগ, আর্থাইটিস, ডায়াবেটিস এলার্জি ও অ্যাজমা রোগ সৃষ্টি করে।
- অতিরিক্ত ওমেগা ৬ ফ্যাটি অ্যাসিড শরীরে প্রবেশের ফলে তা ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিডকে এন্টি ইনফ্লামেটরি হরমোনে কনভার্ট করে। ফলে শরীরে প্রদাহ সৃষ্টি হয়।
- বাদাম শরীরে অতিরিক্ত ফাইটিক এসিড তৈরি করে। শরীর যেহেতু ফাইটিক এসিড সরাসরি হজম করতে পারে না, তাই হজমে বাধা সৃষ্টি হয়।
- যাদের কিডনি ও গলব্লাডারের সমস্যা রয়েছে তাদের কাঠবাদাম ও কাজুবাদাম এড়িয়ে চলা উচিত। কারণ এতে বিদ্যমান অক্সালেট ক্যালসিয়াম কিডনিতে পাথর সৃষ্টি করতে পারে।
- অতিরিক্ত ক্যালরিসমৃদ্ধ হওয়ায় বাদাম বেশি পরিমাণে খেলে ওজন বেড়ে যেতে পারে।
- বাদাম যদি লবণ দিয়ে ভেজে খাওয়া হয় তাহলে সেটি ব্লাড প্রেশার বাড়িয়ে দিতে পারে।
কাঁচা নাকি ভাজা, কোন বাদাম বেশি উপকারী?
আসলে দু’ধরনের বাদামেই মিলেবে উপকারিতা। কাঁচা বাদামে অনেক সময় ব্যাকটেরিয়া থাকে যেগুলো স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। আবার ভাজা বাদাম হারিয়ে ফেলে কিছু পুষ্টিগুণ।
তবে কাঁচা বাদাম পরিষ্কার করে হালকা তাপে ভেজে নিলেই সব ক্ষতিকর উপাদান দূর হয়ে যায়। অতিরিক্ত লবণ, চিনি কিংবা তেল দিয়ে বাদাম ভেজে খেলেও পুষ্টিগুণ কমে যায়।
(সংগৃহীত)
editor's pick
latest video
news via inbox
Nulla turp dis cursus. Integer liberos euismod pretium faucibua