ওটসের উপকারিতা
স্বাস্থ্যকর খাবারের তালিকায় শুরুর দিকেই থাকে ওটসের নাম। বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা পেতে এই খাবারের ওপর আস্থা রাখেন অনেকেই। ফাইবার সমৃদ্ধ এই খাবার খেলে মেলে প্রয়োজনীয় পুষ্টি। সেইসঙ্গে এতে থাকে অ্যাভিন্যানথ্রামাইড, যা সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয়।
ফাইবার ও অ্যাভিন্যানথ্রামাইড ছাড়াও ওটস খেলে মিলবে পর্যাপ্ত আয়রন, প্রোটিন, ভিটামিন বি সহ আরো অনেক পুষ্টি উপাদান। বিশেষ করে এতে থাকা ভিটামিন বি কার্বোহাইড্রেট ভেঙে হজমপ্রক্রিয়াকে সহজ করে দেয়। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক ওটস খেলে কী স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়া যাবে-
কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করেঃ
আমাদের শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে কাজ করে ওটস। এতে থাকা বিটা গ্লুটেন নামক বিশেষ ধরনের ফাইবার এই কাজে সাহায্য করে। আপনি যদি প্রতিদিন তিন গ্রামের মতো ওটস খেয়ে থাকেন তবে তা প্রায় আট থেকে দশ শতাংশ পর্যন্ত কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করবে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ
শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে বিশেষভাবে কার্যকরী ওটস। এতে থাকা বিটা গ্লুটেন এই কাজে বিশেষ ভূমিকা রাখে। ফলে শরীরে ভাইরাস-ব্যাকটেরিয়া জনিত রোগ সহজে বাসা বাঁধতে পারে না।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখেঃ
উচ্চ রক্তচাপ কিংবা নিম্ন রক্তচাপ দুটোই শরীরের জন্য ক্ষতিকার। তাই রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি। এই কাজে আপনাকে সাহায্য করতে পারে ওটস। নিয়মিত ওটস খেলে তা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে। সেইসঙ্গে কমে মানসিক চাপ ও হাইপার টেনশনের ঝুঁকিও।
হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখেঃ
হার্ট ভালো রাখতে বিশেষ ভূমিকা রাখে ওটস। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান শরীরের ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে। যে কারণে কমে হার্টের অসুখের ঝুঁকি। তাই হার্ট ভালো রাখতে চাইলে নিয়মিত ওটস খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখেঃ
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে উপকারী খাবার হতে পারে ওটস। কারণ এটি লো-ক্যালোরি ও সুগার ফ্রি হওয়ায় ডায়াবেটিস রোগীর জন্য বিশেষ উপকারী। তাই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে নিয়মিত ওটস খেতে পারেন। সকালের নাস্তায় ওটস রাখলে উপকার পাবেন।
পুষ্টিবিদেরা ওটসকে প্রথম শ্রেণির সকালের নাশতার মর্যাদা দিয়েছেন। এটাই নাকি বিশ্বের সবচেয়ে পুষ্টিকর শস্য। ওটসের একটা ডিব্বা নিয়ে আপনি নানা কিছু করতে পারেন। রাতে সিনেমা দেখতে দেখতে শুকনা সেগুলো চিবাতে পারেন। দুধে নানা রকমের তাজা ও শুকনা ফল আর মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। পিঠার মতো করে সেঁকেও খেতে পারেন। আবার ব্লেন্ড করে বাটার মিশিয়েও খেয়ে ফেলতে পারেন। ওটস দিয়ে বানানো যায় স্বাস্থ্যসম্মত কেক, বিস্কুট, রুটি, স্মুদি, স্যুপ, ফ্রাইড রাইস, খিচুড়িসহ অনেক কিছু। নিয়মিত ওটমিল খেলে কী হয়, চলুন জেনে নেওয়া যাক।
১. দীর্ঘক্ষণ খিদে লাগবে না
ওটস ফাইবারের খুব ভালো উৎস। এই কার্বোহাইড্রেট হজম করতে সময় লাগে। ফলে লম্বা সময় ধরে খিদে পায় না। তাই আপনার যদি ডায়াবেটিসের সমস্যা থাকে, ওটমিল আপনার জন্য সেরা। এক কাপ রান্না করা ওটমিলে চার গ্রাম ফাইবার থাকে। এটা দৈনিক চাহিদার শতকরা ১৬ ভাগ।
২. টয়লেটে সময়টা ভালো কাটবে
ওটমিল বেটা-গ্লুকোন নামের ফাইবারসমৃদ্ধ, তাই সকালের নাশতা আপনার টয়লেটের অভিজ্ঞতাকে অনেকখানি সহজ করবে। আর ওটমিলের সঙ্গে আপনি যদি আপেল, কলা, খেজুর, ব্ল্যাকবেরি বা মিশ্র বাদাম খান, তাহলে তো কথাই নেই।
৩. মন ভালো রাখে
ওটস মস্তিষ্কে সেরোটোনিনের মাত্রা বৃদ্ধি করে। সেরোটোনিন ঘুম ও রাগ নিয়ন্ত্রণ করে। এটি দুশ্চিন্তা দূর করে মন ভালো রাখতেও বেশ সহায়ক।
৪. ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে
২০২১ সালে জার্নাল অব নিউট্রিশনে প্রকাশিত একটা নিবন্ধে বলা হয়েছে, ‘ওটসের ফাইবার পাকস্থলীকে দীর্ঘক্ষণ সন্তুষ্ট রাখবে। আবার সারা দিন শর্করাজাতীয় খাবার গ্রহণ করার প্রবণতাও কমাবে। ক্যালরি কম গ্রহণ করলে ওজন কমানোও সহজ হবে। এ ছাড়া বেটা-গ্লুকোনের প্রভাবে পাকস্থলীতে পেপটাইড ওয়াইওয়াই নামের একটি হরমোন নিঃসৃত হয়। এই হরমোন আপনাকে মানসিকভাবে তৃপ্ত রাখে আর খাবার গ্রহণের প্রবণতা কমায়। হাইপারগ্লাসেমিয়া (রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ স্বাভাবিকের তুলনায় বেড়ে যাওয়া) নিয়ন্ত্রণেও বেটা-গ্লুকোন ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।’
৫. উপকারী ব্যাকটেরিয়ার পুষ্টিদাতা
ওটমিল প্রিবায়েটিক খাবার। এর মানে হলো, এটা আপনার অন্ত্রে থাকা উপকারী ব্যাকটেরিয়াকে পুষ্টি দেয়। এর ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ে। মনমেজাজ ফুরফুরে থাকে, আর হজমও ভালো হয়।
৬. স্তন ও কোলন ক্যানসার প্রতিরোধে কার্যকর
ওটসের বিদ্যমান অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইটো নিউট্রিয়েন্ট স্তন ও কোলন ক্যানসার প্রতিরোধ করতে পারে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব নারী প্রতিদিন এক বাটি ওটস খান, তাঁদের স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি ৪১ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পায়। পাকস্থলী, ক্ষুদ্রান্ত্র ও বৃহদান্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে ওটস। এসব অঙ্গ সুস্থ থাকলে কোলন ক্যানসার হওয়ার কোনো আশঙ্কাই থাকে না।
(সংগৃহীত)
editor's pick
latest video
news via inbox
Nulla turp dis cursus. Integer liberos euismod pretium faucibua